বুধবার, ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:৩৬

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
বরগুনায় রিফাত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বাঁচাতে রাজনৈতিক পায়তারা !

বরগুনায় রিফাত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বাঁচাতে রাজনৈতিক পায়তারা !

dynamic-sidebar

শফিক মুন্সি : রিফাত হত্যার মূল হোতারা স্থানীয়ভাবে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী; ক্ষমতাসীন দলের একটি অংশের ছত্রছায়াতেই তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যেত বলে অভিযোগ স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার।হত্যাকান্ডের ঘটনায় অংশ নেওয়া রিফাত ফরায়েজি ও রিশান ফরায়েজি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের আত্নীয় বলেও শোনা গেছে এলাকাবাসীর কাছে। তবে দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমের কাছে এসব কথার ভিন্নতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন আসামি নয়ন বন্ড এবং রিফাত ফরায়েজি স্থানীয় সাংসদ পুত্র সুমন দেবনাথের ঘনিষ্ঠ। সুমন দেবনাথ অবশ্য দেলোয়ার হোসেনের কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, আসামিরা সবাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন মামলার আসামি। তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগের কথা সুমন দেবনাথ অস্বীকার করেন।

এদিকে রিফাত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুততর সময়ে গ্রেফতার করার আশ্বাস ব্যাক্ত করে বরিশাল রেন্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, ” শুধু বরিশাল বা বরগুনা নয় সারা বাংলাদেশের পুলিশ রিফাত হত্যাকান্ডের মামলার আসামীদের ধরতে সজাগ আছে। তাদের স্থানীয় কোনো রাজনৈতিক প্রভাব আইনের কাছে বিবেচ্য বিষয় নয়। হত্যাকারীরা যেন কোনোভাবে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে “।

গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে বরগুনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এদিকে নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নির বাড়িতে পুলিশি পাহাড়া নিশ্চিত করা হয়েছে। হত্যাকারী গোষ্ঠীর থেকে কোনো রাজনৈতিক চাপ আসতে পারে ধারণা করে জেলা পুলিশ এ উদ্যোগ নেয়। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ” আমরা ইতোমধ্যে আসামী ধরার জন্য সাড়াশি অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছি। মামলার এজাহারভুক্ত চার নম্বর আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের ধরতেও প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য সমস্ত ব্যবস্থা নিতে যথাযথ নির্দেশ দেয়া হয়েছে”।

তবে দীর্ঘ সময় পার হবার পরও মামলার প্রধান আসামীদের না ধরতে পারায় এলাকাবাসীর মধ্যে একধরণের ক্ষোভ বাসা বাঁধতে শুরু করেছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে আসামীদের ধরার ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টার দাবি করার পরও তাদেরকে ধরতে বিলম্ব হওয়াকে অনেকে রাজনৈতিক পায়তারার সামিল বলে উল্লেখ করছে। নিহত রিফাতের হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের শেল্টার দিচ্ছে বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন এমন একটি খবর কিছু অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হলে জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। সেই উদ্বেগের সমাপ্তি টানতে ডিআইজির এমন বক্ত্যব্যকে গ্রহণযোগ্যই মনে করছে বিশ্লেষক মহল।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে পৌছে দিতে গিয়েছিলেন রিফাত শরীফ। কলেজের গেট পার হতে না হতেই ১০ থেকে ১২ জনের একদল যুবক তাকে পথরোধ করে মারতে মারতে টেনে রাস্তায় নিয়ে আসে। এরপরই নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরায়েজী ধারালো দা দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময়, রিফাতের স্ত্রী মিন্নি রিফাতকে বারবার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।কিন্ত, ততক্ষণে উপুর্যপরি কোপে মারাত্মকভাবে আহত হয় রিফাত।

পরে, গুরুতর আহত অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় সেখান থেকে তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া। সেখানেই রিফাত বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রিফাতকে কোপের আঘাত থেকে বাঁচাতে তার স্ত্রী মিন্নির ভুমিকা প্রথমে বেশ আলোচিত হলেও পরবর্তীতে হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের সঙ্গে মিন্নির অন্তরঙ্গ ছবি ও ফেসবুক কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে প্রকাশ পেলে সবার মধ্যে ধোয়াশার সৃষ্টি হয়। এই ধোয়াশার মধ্যেই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে বিলম্ব হওয়াকে কেউ কেউ মূল আসামীদের বাঁচানোর রাজনৈতিক পায়তারা হিসেবে মনে করছে।

প্রসঙ্গত, হত্যাকান্ডে জড়িত মূল আসামীরা দীর্ঘদিন এলাকায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেই রেশ টেনে আলোচিত এই হত্যাকান্ডের পরও উল্লেখিত আসামীরা পার পেয়ে যাবার চেষ্টা চালাবে এমনটাই স্বাভাবিক। তবে প্রধানমন্ত্রী ও হাইকোর্টের এই ঘটনায় তদারকিকে সবাই ইতিবাচক ভাবেই দেখছে। যার দরুন দ্রুততম সময়ে আসামীদের গ্রেফতারের পুলিশি আশ্বাসকে বাস্তবে দেখতে উন্মুখ পুরো দেশবাসী।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net